মুক্তচিন্তাহোম

সতর্ক থাকতে হবে : জনতার আকাঙ্খা যেন হাইজ্যাক না হয়

।।সিরাজুল ইসলাম শাহীন।।

বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলন এক দফা ঘোষণা করেছে ।খুব দ্রুত ছাত্র-নাগরিক অভ্যুত্থানের জন্য সর্বস্তরের নাগরিক, ছাত্রসংগঠন ও সব পেশাজীবী মানুষের সঙ্গে মিলে সম্মিলিত মোর্চা ঘোষণা করা হবে । সবার সঙ্গে আলোচনার মাধ্যমে ভবিষ্যৎ বাংলাদেশের জাতীয় রূপরেখা তৈরী হবে। এখন খুবই স্পর্শকাতর সময়।

প্রস্তাবিত মোর্চায় সঠিক মানুষদের অন্তর্ভুক্ত করতে হবে। দেশপ্রেমিক,সৎ, মেধাবী ও যোগ্যতা সম্পন্ন প্রতিভার সমন্বয়ে একটি সফল বডি দেশবাসীর কাম্য। যারা দল মতের উর্ধে উঠে জাতীয় ঐক্য নিশ্চিত করে সংকট কাঠিয়ে উঠেত সক্ষম হবেন। কিন্তু কিছু বিষয়ে সতর্ক থাকতে হবে। দালালি, দুর্নীতি, অবিচার ও বিভাজনের রাজনীতি অন্যতম। এসবে কোন ছাড় দেয়া যাবে না। যারা এক দফার ঘোষণার আগমুহূর্ত পর্যন্ত খুনি শেখ হাসিনার পদত্যাগ দাবি করতে পারেন নি তারাই দালাল।

গত ১৬ বছরের অপশাসনের নৈতিক দায়ভার এদের। সময় সুযোগ বুঝে চলমান ছাত্র আন্দোলনের পক্ষে কথা বলা, অশ্রু ঝরানো, স্লোগান দেয়া রহস্যজনক বটে । এমনকি আমাদের সন্তানদের রক্তের উপর দাঁড়ানো গণঅভ্যুত্থান হাইজ্যাক হতে পারে। আর দুর্নীতিপরায়নরা দেশি – বিদেশী টোপ গিলতে পারে অনায়াসে। ন্যূনতম দেশপ্রেমের বালাই এদের নেই।

সোনামিনদের তারুণ্যের জোয়ারে হতভাগা জাতি আজ স্বপ্ন দেখছে রাষ্ট্র সংস্কারের। এ স্বপ্নের কোন ব্যাত্যয় যেন না হয়। সতর্ক পদক্ষেপ খুবই জরুরী। দেশপ্রেমের এক দৃশ্যমান পরীক্ষা হচ্ছে বিভক্তির বিরুদ্বে ঐক্যচিন্তা। অতীতে জাতীয় ঐক্য বিনষ্টে জড়িতরা যেন সুযোগ না পায়। মাটি ও মানুষের স্বকীয় – ধর্মীয় মূল্যবোধ হচ্ছে মূল্যবান কষ্টিপাথর। এই ছাঁকনিতে আটকে যাওয়ারা বুদ্বিপ্রতিবন্ধী অথবা বিদেশী এজেন্ট। দেশে বিভাজনের রাজনীতি আর হত্যা -গুম -অবিচার সয়লাবে প্ৰত্যক্ষ ও পরোক্ষ ভাবে এরাই জড়িত । এদের বিশ্বাস করার কোন কারন থাকতে পারে না।

পৃথিবীর সকল রাষ্ট্র ও জাতির বন্ধুত্ব আমাদের কাম্য। কিন্তু প্রভুত্ব নয়। ন্যূনতম আত্বমর্যাদাহীনরা এই মূল চিন্তাধারা থেকে সরে আসে। পরনির্ভরশীল হয়ে পড়েন। সন্দিক্ষনে আনেক শক্তি এগিয়ে আসেন । দৃঢ়তার সাথে আপন ব্যাক্তিত্ব বলে সকল চাপ মোকাবেলা করতে হয়। সকল কিছুর স্রষ্টা ও নিয়ন্ত্রক আল্লাহ রাব্বুল আলামিনের উপর আস্থা ও বিশ্বাস এ ক্ষেত্রে নিয়ামক। অতিমাত্রার বিদেশ নির্ভর ভ্রষ্ট চিন্তার মানুষদের পরিহার করতে হবে। মনে রাখতে হবে কোন সফল বিপ্লব প্রতপক্ষের সাথে আলোচনা করে হয় না। ফায়সালা ময়দান থেকেই করতে হয়। সুতরাং সরকার এবং তার রক্ষকদের কোন প্রশ্রয় দেয়া যাবে না। ওদের জন্য জন্য খোলা থাকবে একটা রাস্তা ,” বহির্গমন ”।

চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নিবে শুধুমাত্র বিপ্লবের সৈনিকরা। অন্য খেলোয়াড়দের সাহায্যের হাত ও প্রস্তাবনা মূলত ফাঁদ। সাময়িক স্বস্থিদায়ক মনে হলেও পরিবর্তিতে কঠিন মূল্য দিতে হতে পারে। নার্ভ শক্ত রেখে ফাঁদ সমূহ এড়িয়ে মঞ্জিলে পৌঁছে যাওয়া এ মুহূর্তের বড় চ্যালেঞ্জ। ২০২৪ সালে বাংলার দামাল সন্তানরা পৃথিবীতে নতুন ইতিহাস তৈরী করেছে। সকল ষড়যন্ত্র, চাপ, ঘাটতি পায়ে দলে শহীদি রক্তে ভেঁজা মাটিতে তাঁরা পরিপূর্ন রাষ্ট্রীয় সংস্কার সম্পন্ন করবে এ আশা করছি। কায়মনো বাক্যে মহান আল্লাহর দরবারে চলমান এ আন্দোলনের পূর্ণাঙ্গ সাফল্য কামনা করছি। আমিন।

সিরাজুল ইসলাম শাহীন: লেখক , লন্ডন প্রবাসী । sirajulislamshaheen@yahoo.com;

Sheikhsbay

Related Articles

Back to top button
Close
Close