পূর্ব লণ্ডনে বসেছে বিশ্বের সর্ববৃহৎ অস্ত্র মেলা
*মানবাধিকার বিবেচনায় বাংলাদেশ, সৌদিসহ ৬ দেশকে আমন্ত্রণ জানানোয় উদ্বেগ
*শতাধিক প্রতিবাদকারী গ্রেফতার
।। সুরমা প্রতিবেদন ।।
লণ্ডন, ১৪ সেপ্টেম্বর : পূর্ব লণ্ডনের এক্সেল সেন্টারে শুরু হয়েছে বিশ্বের সর্ববৃহৎ ‘আর্মস ফেয়ার’ বা অস্ত্র মেলা। ১৪ সেপ্টেম্বর, মঙ্গলবার থেকে শুরু হওয়া এই অস্ত্র মেলায় বিশ্বের অর্ধশতাধিক দেশের দেড় সহস্রাধিক প্রদর্শনকারী এক্সেল সেন্টারে উপস্থিত হয়েছেন। আভ্যন্তরীণ মানবাধিকার পরিস্থিতির অবনতি বিবেচনায় ব্রিটিশ পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের তালিকাভূক্ত বাংলাদেশ, সৌদি আরবসহ ৬টি দেশকে আমন্ত্রণ জানানোয় উদ্বেগ প্রকাশ করা হয়েছে। ভারী ট্যাঙ্কসহ এসময়ে তৈরী সর্বাধুনিক বিপুল অস্ত্রের সমাহারে এই অস্ত্র মেলার আয়োজন করেছে ডিফেন্স এণ্ড সিকিউরিটি ইক্যুপমেন্ট ইন্টারন্যাশনাল (ডিএসইআই)। শুরু হওয়ার অনেক আগে থেকে বিশ্ব শান্তির অন্তরায় এধরণের অস্ত্র মেলা আয়োজন না করার অনুরোধ ও প্রতিবাদ জানিয়ে আসছেন মানবতাবাদীরা। টানা এক সপ্তাহ থেকে চলা প্রতিবাদ থেকে এযাবত শতাধিক জনকে আটক করেছে পুলিশ।
দ্যা গার্ডিয়ানের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে যে, পূর্ব লণ্ডনের ডকল্যাণ্ডসে শুরু হওয়া ইউরোপের সবচেয়ে বড় অস্ত্র মেলায় ব্রিটিশ সরকারের পক্ষ থেকে এমন ৬টি দেশকে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে যাদের মানবাধিকার পরিস্থিতি ফরেন অফিসে অগ্রাধিকার বিবেচনায় তালিকাভূক্ত রয়েছে। এই আমন্ত্রিতদের মধ্যে অন্যতম সৌদি আরব, যেখানে ইয়েমেনের যুদ্ধে ব্যবহার করা যেতে পারে এমন ২০ বিলিয়ন পাউণ্ডের অস্ত্র রপ্তানির অনুমতি দিয়েছে যুক্তরাজ্য। জাতিসংঘের মতে, সাত বছরের রক্তক্ষয়ী সংঘাত তা বিশ্বের সবচেয়ে বড় মানবিক সংকটের কারণ হয়েছে।
মেলায় ডিপার্টমেন্ট ফর ইন্টারন্যাশনাল ট্রেড (ডিআইটি) কর্তৃক আনুষ্ঠানিকভাবে আমন্ত্রিত মানবাধিকার উদ্বেগজনক হিসেবে বিবেচিত অন্যান্য দেশগুলো হলো বলে বাহরাইন, কলম্বিয়া, মিশর ও ইরাক।
বিশ্বব্যাপী কোভিড মহামারী সত্ত্বেও চার দিনব্যাপী আন্তর্জাতিক ইভেন্ট চলাকালীন সেই দেশগুলির প্রতিনিধিরা বিশ্বের শীর্ষ ১০ অস্ত্র প্রস্তুতকারকের ৯০% সহ ৮০০ টিরও বেশী প্রদর্শনীর সাথে মিশতে সক্ষম হবেন।
ক্যাম্পেইন এগেইনস্ট আর্মস ট্রেড (সিএএটি)-এর গবেষণা সমন্বয়কারী স্যামুয়েল পার্লো-ফ্রিম্যান বলেন, ছয়টি দেশের উপস্থিতিতে বোঝা যায়, অস্ত্র রপ্তানি নিয়ন্ত্রণ, বা বৈশ্বিক শান্তি, মানবাধিকার বা সুশাসনের ব্যাপারে গুরুত্ব দিচ্ছে না যুক্তরাজ্য।
এই মেলা বাতিল করার আহবান জানিয়েছিলেন ল-ন মেয়র সাদিক খানসহ বিপুলসংখ্যক মানবাধিকারকর্মীরা। ডেইলি মিরর‘র প্রতিবেদন থেকে জানা গেছে, এযাবত ১০২ জন প্রতিবাদকারীকে আটক করেছে পুলিশ।
এক্সেল কনভেনশন সেন্টারের এই অস্ত্র মেলা ডিএসটিআই‘র সবেচেয় বড় ট্রেড শো যা ব্রিটিশ সরকারের সহযোগিতায় এবং ভারী পুলিশিং অপারেশনের সাহায্যে অনুষ্ঠিত। শেষবার ২০১৯ সালে এই ইভেন্ট অনুষ্ঠিত হয়েছিলো, যার জন্য খরচ হয়েছিলো ২.৪ মিলিয়ন পাউণ্ড।